1. admin@dailypressbd.com : ডেইলি প্রেস ডেস্ক :
ডাকসু নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর, ছয় বছর পর ভোট উৎসবে মাতবে ক্যাম্পাস - DAILY PRESS
বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

ডাকসু নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর, ছয় বছর পর ভোট উৎসবে মাতবে ক্যাম্পাস

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ফাইল ফটো

ডেইলি প্রেস ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঘোষণা করা হলো ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনের তারিখ। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এই প্রতীক্ষিত নির্বাচন। মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ছিল চাঞ্চল্য ও আগ্রহ। ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর নানা জটিলতা ও মহামারির কারণে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। প্রায় ছয় বছর পর আবারও ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের খবরে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ক্যাম্পাসের রাজনীতিক পরিমণ্ডল।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৩১ জুলাই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর ৮ আগস্ট পর্যন্ত ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি জানানো যাবে। ১১ আগস্ট প্রকাশ পাবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।

১২ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৯ আগস্ট বেলা ৩টা পর্যন্ত। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ২০ আগস্ট, প্রাথমিক প্রার্থীতালিকা ২১ আগস্ট, আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৪ আগস্ট। পরদিন, ২৫ আগস্ট বিকেল ৪টা চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করা হবে।

নির্বাচনের দিন ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে এবং ভোটগ্রহণ শেষে সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

ডাকসুর পাশাপাশি একইদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল সংসদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক নানা কাজে অংশ নিতে পারবেন, তুলে ধরতে পারবেন শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়া, অভিযোগ ও সম্ভাবনার কথা।

ছাত্র রাজনীতিতে উন্মাদনা ফিরছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের ১১ মার্চ। তার আগে ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল পূর্ববর্তী নির্বাচন। অর্থাৎ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। আর এবার ৬ বছর পর আবারও সেই রাজনৈতিক উৎসব ফিরছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও প্যানেলগুলো নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট — সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা যেন এক নবজাগরণ অনুভব করছে।

শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও আগ্রহ

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে তারা নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। অনেকে বলছেন, ডাকসু হলো ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার শ্রেষ্ঠ মঞ্চ। তারা চান, এবার যেন নির্বাচন সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং অবাধ হয়।

ছাত্ররা আশা করছেন, এই নির্বাচন নতুন নেতৃত্ব তৈরি করবে, যারা শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সমস্যা, অধিকার এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরবে। ডাকসুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ গড়ে উঠবে বলে মনে করেন অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রস্তুতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে এবং নিয়মিত তদারকি চলবে।

অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “আমরা একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য এবং শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। এজন্য সকল পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন — এটি কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং শিক্ষার্থীদের জন্য এক ঐতিহাসিক সুযোগ, যা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব নির্মাণের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করবে।

শেয়ার করুন:

সম্পর্কিত খবর:
© 2025 Daily Press | KFAST Media | All Rights Reserved