ডেইলি প্রেস ডেস্ক: সরকার একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে মোবাইল সিম ব্যবহারের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে ১০টি। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাঁদের নামে বর্তমানে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত আছে, তাঁদের অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এর আগে ব্যবহারকারীদের সুযোগ দেওয়া হবে নিজে থেকেই অপ্রয়োজনীয় সিম বাতিল করার। পুরো প্রক্রিয়া আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বিটিআরসির এই সিদ্ধান্ত মূলত জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপারেটরদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা রোধ এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছে। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত প্রকৃত সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৭৫ লাখ। তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ব্যবহারকারীর নামে পাঁচটির কম সিম রয়েছে। ৬ থেকে ১০টি সিম ব্যবহার করছেন ১৬ শতাংশ এবং ১১টির বেশি সিম ব্যবহার করছেন মাত্র ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
বিটিআরসি জানিয়েছে, ১ আগস্ট থেকে তিন মাস সময় দেওয়া হবে, যাতে ব্যবহারকারীরা নিজেরাই ১০টির বেশি সিম বাতিল করতে পারেন। এরপর বিটিআরসি ও তাদের নিয়োগকৃত ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারীদের সিম তালিকা তৈরি করবে এবং সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের জানানো হবে। এরপর অপারেটররা গ্রাহকদের কাছে বারবার এসএমএস পাঠিয়ে সিমের সংখ্যা কমানোর জন্য অনুরোধ জানাবে। একই সঙ্গে অপারেটরের ওয়েবসাইট, সংবাদমাধ্যম ও প্রচারণার মাধ্যমে বিষয়টি গ্রাহকদের জানানো হবে।
যাঁদের নামে অতিরিক্ত সিম রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যবহার ও রাজস্ব বিবেচনায় রেখে শীর্ষ ১০টি সিম টিকিয়ে রাখা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি ব্যবহৃত সিমগুলো অগ্রাধিকার পাবে। একই সঙ্গে চেষ্টা থাকবে যেন একজন ব্যবহারকারীর প্রতিটি অপারেটর থেকে অন্তত একটি সিম বজায় থাকে। সিম বাতিলের তালিকা তৈরি হলে, অপারেটররা তা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা নেবে।
গ্রাহকরা *১৬০০১# নম্বরে ডায়াল করে জানতে পারবেন তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে কতটি সিম নিবন্ধিত রয়েছে। প্রয়োজন হলে মালিকানা হস্তান্তরের (ট্রান্সফার অব ওনারশিপ) মাধ্যমে অতিরিক্ত সিম অন্যের নামে নিতে পারবেন। সময়সীমা শেষে যেসব সিম অতিরিক্ত থাকবে, সেগুলো বিটিআরসি বন্ধ করে দেবে। তবে কোনো গ্রাহকের গুরুত্বপূর্ণ সিম যদি ভুলবশত বন্ধ হয়ে যায়, তিনি অপারেটরের মাধ্যমে পুনরায় তা চালু করার সুযোগ পাবেন।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার মোবাইল সেবায় নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। একই সঙ্গে এতে ভুয়া সিম ব্যবহার, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও অনিয়ম রোধে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।