1. admin@dailypressbd.com : ডেইলি প্রেস ডেস্ক :
এনসিপির ইশতেহার ঘোষণা, যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে - DAILY PRESS
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন

এনসিপির ইশতেহার ঘোষণা, যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৭ বার পড়া হয়েছে
শহীদ মিনারে সমাবেশে ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন এনসিপি আহবায়ক নাহিদ ইসলাম।

ডেইলি প্রেস ডেস্ক: দেশে ‘দ্বিতীয় রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়ন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার, গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারসহ ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক জনসভায় এ ইশতেহার ঘোষণা করেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বিকেল চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় ঘণ্টাখানেক পর। উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলে দলে অংশ নেন নেতাকর্মীরা। অংশগ্রহণ করেন জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের স্বজন এবং আহত ব্যক্তিরাও।

সমাবেশে বক্তব্যের শুরুতেই শহীদদের স্মরণ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত বছর এই দিনেই এই শহীদ মিনার থেকে ফ্যাসিবাদ পতনের এক দফা দাবি তুলেছিল ছাত্র-জনতা। সেটা কোনো দলের নয়, ছিল জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আওয়াজ। আজ সেই একই জায়গা থেকে আমরা ঘোষণা করছি জনগণের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইশতেহার।”

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ গণঅভ্যুত্থান ছিল শুধু সরকার পতনের জন্য নয়, বরং গোটা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অবসানের রায়। আমরা বিশ্বাস করি, এই নতুন স্বাধীনতা অর্থহীন হবে যদি পুরনো কাঠামো অটুট থাকে।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, “ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভেঙে ফেলতে হলে প্রয়োজন দ্বিতীয় রিপাবলিক—একটি নতুন শাসনব্যবস্থা, একটি নতুন সংবিধান, যেখানে জনগণ হবে সর্বময় ক্ষমতার উৎস। সেই লক্ষ্যেই আমরা আমাদের ২৪ দফা প্রস্তাব পেশ করছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলেই কেবল ২০২৪-এর আন্দোলন সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক বিপ্লবে রূপান্তরিত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “গত এক বছরে আমরা বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জ, শহর-বন্দর, শ্রমিক বস্তি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল পর্যন্ত ঘুরে দেখেছি, কথা বলেছি শহীদ পরিবার, আহত যোদ্ধা, শ্রমিক, কৃষক, তরুণ, পেশাজীবীদের সঙ্গে। তাদের প্রতিটি কথা, প্রত্যাশা ও কষ্ট থেকেই আমরা আমাদের ইশতেহারের প্রতিটি পঙ্‌ক্তি রচনা করেছি।”

এরপর নাহিদ ইসলাম জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ঘোষণা করেন। ইশতেহারের প্রধান দফাগুলো হলো:

১। নতুন সংবিধান ও দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র

পুরোনো যেকোনো অসংগতি ও অবিচার পরিহার করে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হবে, যেখানে থাকবে সমতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। এই নতুন সংবিধানে একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের স্থান থাকবে না। রাষ্ট্রের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার সঠিক ভারসাম্য নিশ্চিত করা হবে।

২। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং ঐ সময়ের গণহত্যা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা হবে। শহীদ ও আহতদের প্রতি সর্বাত্মক সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যকর করা হবে।

৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার

রাজ্যীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে পক্ষপাতহীন, মানবিক ও জনগণের সেবায় উৎসর্গীকৃত করা হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া আধুনিক ও স্বচ্ছ হবে, যাতে মিথ্যা ও কালোবাজারি রোধ হয়।

৪। ন্যায়ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থা ও আইন সংস্কার

স্বাধীন বিচার বিভাগ গড়ে তোলা হবে যা মজলুমের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। ঔপনিবেশিক আমলের সকল আইন আধুনিক মানবাধিকার মান অনুযায়ী সংস্কার করা হবে। বিচার কার্যক্রম দ্রুত ও ডিজিটালাইজড হবে।

৫। সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন

প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে। দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ‘হুইসলব্লোয়ার প্রটেকশন’ আইন প্রণয়ন করা হবে।

৬। জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মানবাধিকার রক্ষক ও জনগণের সেবক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। অযথা গ্রেপ্তার বন্ধ ও পুলিশিং আধুনিকীকরণ করা হবে। র্যাব বিলুপ্ত ও গোয়েন্দা সংস্থার অপব্যবহার রোধ করা হবে।

৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার

গ্রামীণ অঞ্চলের স্বকীয়তা বজায় রেখে স্থানীয় উন্নয়ন ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য গ্রাম পার্লামেন্ট গঠন করা হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম শক্তিশালী করা হবে।

৮। স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ

গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে এবং মালিকানায় অসঙ্গতি ও রাজনৈতিক প্রভাব রোধ করা হবে। মিসইনফরমেশন ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া হবে।

৯। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা

সবার জন্য অর্থের বাধা ছাড়াই মানসম্পন্ন চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। ডিজিটাল স্বাস্থ্য রেকর্ড সিস্টেম চালু করে স্বাস্থ্যসেবা আধুনিকীকরণ করা হবে। মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সুব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

১০। জাতিগঠনে শিক্ষানীতি

শিক্ষা অধিকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বরাদ্দ বৃদ্ধি পাবে। জাতীয় পাঠ্যক্রম আধুনিকায়ন ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও রাজনীতির প্রভাব হ্রাস করা হবে।

১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি

দেশে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। সেমিকন্ডাক্টর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ গবেষণা সহ বিভিন্ন উচ্চপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্তার মর্যাদা

সকল ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। সাম্প্রদায়িকতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিছিয়ে পড়া অংশের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা বৃহৎ অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়েও রাষ্ট্র তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেনি। এজন্য নিম্নকক্ষে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে, যা নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সমন্বয় করা হবে। নারী উত্তরাধিকার ও সম্পত্তি অধিকার দ্রুত পেতে আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষের নিয়োগ, পদোন্নতি ও বেতন বৈষম্য দূর করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা গ্রহণ করা হবে। গৃহিণী নারীদের অবদান জাতীয় উৎপাদনের অংশ হিসেবে স্বীকৃত হবে।

১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি

অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হবে মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ ও তাদের সামগ্রিক উন্নয়ন। কেবল দক্ষতা নয়, মানুষের মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গঠনে বিনিয়োগ করা হবে। আমরা বাজারভিত্তিক হলেও কল্যাণমুখী অর্থনীতি গড়ে তুলব। সিন্ডিকেট ও গোষ্ঠীশাসন দমন করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার বিকাশ নিশ্চিত করব।

১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান

বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লাখ বেকার, এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ। দেশের সব কর্মক্ষম নাগরিকের জন্য দেশ-বিদেশে মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করব। রপ্তানিমুখী শ্রমঘন শিল্পে বহুমুখীকরণ ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলব। সরকারি-বেসরকারি খাতে বেতনভুক্ত ইন্টার্নশিপের সুযোগ বাড়াব।

চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতি, সুপারিশ ও স্বজনপ্রীতি রোধ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করব। তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী পরিবেশ তৈরি করব। জেলাভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং ও রিমোট ওয়ার্ক হাব গড়ে তুলব, পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, কো-ওয়ার্কিং স্পেস ও উচ্চগতির ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করব।

১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি

বাংলাদেশের টেকসই অর্থনীতির জন্য রপ্তানির বহুমুখীকরণ এবং বিকল্প বাজারে প্রবেশাধিকারে বিনিয়োগ এখন সময়ের দাবি। বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি করব। গার্মেন্টসের বাইরে শ্রমঘন, সম্ভাবনাময় খাতে যেমন চামড়া, পাদুকা, আসবাব, হোম ডেকর, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে বিনিয়োগ ও প্রণোদনা জোরদার করব।

১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব

নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য কৃষি পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা এবং ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা। আধুনিক যন্ত্রপাতি, জলবায়ু-সহনশীল বীজ, পরিবেশবান্ধব সার ও প্রযুক্তিনির্ভর সহায়তায় কৃষিকে আরও লাভজনক ও উৎপাদনশীল করা হবে। কৃষি সম্প্রসারণকে দক্ষ ও আধুনিক করে তুলতে প্রশিক্ষণ ও মোবাইল ভিত্তিক পরামর্শ সেবা সহজলভ্য করা হবে। অঞ্চলভিত্তিক অভিযোজন কৌশলের মাধ্যমে উপকূলীয় লবণাক্ততা ও খরাপ্রবণ এলাকায় টেকসই সমাধান নিশ্চিত করা হবে। কৃষি উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিশ্লেষণের জন্য একটি ডায়নামিক জাতীয় তথ্যভান্ডার গঠন করা হবে।

১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার

সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের স্বীকৃতি ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করব। নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য অঞ্চলভিত্তিক আয়-ক্ষমতা বিবেচনায় সমন্বিত ন্যূনতম মজুরি কাঠামো প্রণয়ন করা হবে। শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা, আইনি সুরক্ষা ও পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা নিশ্চিত করতে ‘স্থায়ী শ্রম কমিশন’ গঠন করা হবে। শ্রম আইন আধুনিকায়ন ও শ্রম ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও সেবা বৃদ্ধি করা হবে। কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কর্ম-সুরক্ষা-বিমা এবং ন্যূনতম পেনশন তহবিল গঠনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হবে।

১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা

জাতীয় প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর জনগণের সার্বভৌম মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি করে সম্পদের অনুসন্ধান ও আহরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সম্পদের ব্যবহার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদার সমন্বয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে। স্থানীয় জনগণের ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করা হবে।

২০। নগরায়ণ, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা

অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে শহরগুলো বসবাসে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাজধানীসহ সব শহরে নদী ও খালকেন্দ্রিক নগর ব্যবস্থাপনা এবং উচ্চগতির, নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বায়ুদূষণ কমানো, সুপেয় পানি সরবরাহ, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খাল উদ্ধার ও গ্রিনবেজড জনপরিসর তৈরিতে কাজ করা হবে।

২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা

একটি জলবায়ু-সহনশীল, দূষণমুক্ত ও পরিকল্পিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে, যেখানে নদী, বায়ু ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সবুজ প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে। বড় শহর ও আশপাশ এলাকা “নো ব্রিক-কিলন জোন” ঘোষণা করা হবে। সামাজিক বনায়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার

প্রবাসী বাংলাদেশিরা শুধুমাত্র রেমিটেন্স উৎস নয়, তারা দেশের সম্মান ও পুনর্গঠনের অংশীদার। তাদের অবদান রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হলে মরদেহ দ্রুত ও হয়রানিমুক্ত দেশে আনার ব্যবস্থা এবং পরিবারের জন্য সহায়তা দেওয়া হবে।

২৩। বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি

পররাষ্ট্রনীতি সব সময় দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার উপরে স্থাপিত থাকবে। দলীয় স্বার্থ ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থাকবে। পারস্পরিক সম্মান ও সম-মর্যাদায় বৈদেশিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করা হবে।

২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল

শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ছাড়া কার্যকর বৈদেশিক নীতি সম্ভব নয়। গণপ্রতিরক্ষা দর্শনের মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত ও সুশৃঙ্খল শক্তি হিসেবে দেশের সেবায় উৎসাহিত করা হবে।

অত্যাধুনিক সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম দ্বারা শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা হবে। উন্নত ড্রোন প্রযুক্তি, দেশীয় সামরিক গবেষণা ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেনাবাহিনীতে UAV ব্রিগেড গঠন করা হবে। নন-নিউক্লিয়ার সেকেন্ড স্ট্রাইক সক্ষমতা অর্জন করা হবে। সাবমেরিনভিত্তিক শক্তিশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গড়ে তোলা হবে।

প্রতিরক্ষা কৌশলের কেন্দ্রে থাকবে দেশের ভূপ্রাকৃতিক গঠন, নদীবিধৌত অঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক নিরাপত্তার সুসমন্বয়। জাতীয় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে একটি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করা হবে। সমন্বিত প্রতিরক্ষা নীতির কেন্দ্রে থাকবে সংসদীয় নজরদারি, নাগরিক অধিকার রক্ষা ও আঞ্চলিক শান্তি ও কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এক বছর আগে এই শহীদ মিনারে আমরা শপথ নিয়েছিলাম দেশকে স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করতে। আপনারা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন পরাজিত করেছেন এবং দেশের ওপর কর্তৃত্ব ফিরিয়ে নিয়েছেন। এবার আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, সবাই মিলে সেকেন্ড রিপাবলিক গড়ে তুলে ২৪ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ি।’

শেয়ার করুন:

সম্পর্কিত খবর:
© 2025 Daily Press | KFAST Media | All Rights Reserved