1. admin@dailypressbd.com : ডেইলি প্রেস ডেস্ক :
জুলাই আন্দোলকারীদের ফাঁসি দিতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা - DAILY PRESS
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন

জুলাই আন্দোলকারীদের ফাঁসি দিতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

ডেইলি প্রেস ডেস্ক: চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। মামলার সূচনা বক্তব্যে রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চাঞ্চল্যকর তথ্য উপস্থাপন করেছেন, যেখানে শেখ হাসিনার সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ ও আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে ‘ফাঁসি দেওয়ার’ মন্তব্য তুলে ধরা হয়।

ফোনালাপে ‘ফাঁসির হুমকি’

তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে জানান, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার টেলিফোন কথোপকথনে তিনি বলেন, “তো রাজাকারের তো ফাঁসি দিছি, এবার তোদেরও তাই করব। একটাও ছাড়ব না, আমি বলে দিছি…”

এই ফোনালাপে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলেন। একই সময় তিনি আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে সহিংস দমন-পীড়নের ইঙ্গিত দেন।

পুলিশের ওয়্যারলেসে ‘গুলি করার নির্দেশ’

মামলার অংশ হিসেবে তুলে ধরা হয় তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বেতার বার্তা, যেখানে তিনি পুলিশ সদস্যদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার নামে “হাঁটু গেড়ে কোমরের নিচে গুলি” করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ বাস্তবায়নে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখাঁরপুল এলাকায় মোতায়েন করা পুলিশ সদস্যরা নির্বিচারে গুলি চালায়, যেখানে ছয়জন নিহত হন।

হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ঘটনার মাত্র কয়েকদিন আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরেকটি ফোনালাপে (সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে) জানা যায়, তিনি আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও লেথাল উইপন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মামলার অগ্রগতি

এই মামলায় অভিযুক্ত আটজনের সবাই পুলিশের সাবেক সদস্য। চারজন—আরশাদ হোসেন, সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলাম—কারাগারে রয়েছেন এবং গতকাল তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। অন্য চারজন পলাতক।

এছাড়া, শেখ হাসিনাসহ আরও একটি মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। বাকি দুই আসামি—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। এই মামলায় সাবেক আইজিপি রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হতে সম্মত হয়েছেন।

শহীদের বাবা প্রথম সাক্ষী

চানখাঁরপুলে নিহত ছাত্র শহীদ শাহারিয়ার খান আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, আনাস ‘গর্বিত হয়ে শহীদ হওয়ার’ ইচ্ছা ব্যক্ত করে আন্দোলনে গিয়েছিলেন এবং এরপর পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাঁর দাফন হয় ‘শহীদি মর্যাদায়’, কোনো ময়নাতদন্ত ছাড়াই।

শেয়ার করুন:

সম্পর্কিত খবর:
© 2025 Daily Press | KFAST Media | All Rights Reserved